বাসায় গিয়ে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা
নোয়াখালীতে পরকীয়া প্রেমের জেরে বাসায় গিয়ে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম। বুধবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় সুধারাম মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নোয়াখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের হরিনারায়ণপুরের কচি মিয়ার বাসা থেকে আলতাফ হোসেনকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি একাই মা নূর নাহার বেগম (৪০) ও মেয়ে ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তীকে (১৬) হত্যা করেছেন। পরে আলতাফের মেস থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুড়ির কভার উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আলতাফ লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চর বাদাম ইউনিয়নের মৃত আবুল কালামের ছেলে।
তিনি বলেন, ভিকটিম নূর নাহার বেগমের সঙ্গে প্রবাসে থাকা অবস্থায় রং নাম্বারে পরিচয় হয় আসামি আলতাফ হোসেনের। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসামি আলতাফকে ওমান থেকে দেশে এসে ব্যবসা করার জন্য বলে ভিকটিম এবং ব্যবসার সম্পূর্ণ মূলধন এবং তার সব দেনা বহন করার আশ্বাস দেন। ভিকটিমের আশ্বাসে এক সপ্তাহ আগে আসামি ওমান থেকে দেশে আসেন। দেশে এসে ভিকটিম নূর নাহার বেগমের কাছে ব্যবসার টাকা দাবি করলে টাকা দিতে টালবাহানা করেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, সকালে টাকা চাওয়ার জন্য ভিকটিমের মাইজদীর বাসায় যান আসামি। ভিকটিম টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ভিকটিম হুমকি দেন যে, টাকা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আলতাফকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হবে। এ সময় আসামিকে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিতে গেলে আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে ভিকটিমকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। চিৎকার শুনে মাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে আসামি ভিকটিমের মেয়ে ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তীকেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে প্রিয়ন্তী দৌঁড়ে নিচ তলার ভাড়াটিয়ার বাসার দরজায় ধাক্কা দেন। ভাড়াটিয়া দরজা খুলে দেওয়ার পর প্রিয়ন্তী ডাইনিং রুমের মেঝে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। প্রিয়ন্তীর পিছু পিছু আসামি আলতাফ হোসেন দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে, ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ভিকটিম নুর নাহার বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান। স্থানীয়রা হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রিয়ন্তীর মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামি আলতাফ হোসেনকে থানা হেফাজতে নিয়ে পুলিশ বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে আসামি পুলিশের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বলেছে। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
আহমা/চাহ