জামালপুরে আওয়ামী সুবিধাভোগীদের তান্ডব

জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার জোড়খালি ইউনিয়নের বেড়া গ্রামে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী তৎপরতায় অতিষ্ঠ হয়ে প্রশাসনের দারস্থ হয়েছেন এলাকাবাসী। অভিযোগ, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কিছু চিহ্নিত ব্যক্তি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। অথচ এদের অধিকাংশই অতীতে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় ছিলো।
এক লিখিত অভিযোগে এলাকাবাসীর পক্ষে হাসান মারুফ জানান, টিটু, কাশেম ও আনোয়ার নামের তিন ব্যক্তি নিজেরা বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতা না হয়েও “বিএনপি”র পরিচয় দিয়ে একাধিকবার চাঁদা দাবি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নির্দিষ্ট অভিযোগ ও ঘটনাপঞ্জি।
অভিযোগে বলা হয়, সম্প্রতি মুকুল খান নামে এক আওয়ামী লীগ সমর্থককে গভীর রাতে ফোনে ডেকে স্থানীয় একটি স্কুল মাঠে এনে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না দিলে পুলিশ দিয়ে তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। মুকুল খান বিষয়টি স্থানীয় বিএনপির সহ-সভাপতি (অব.) জামিউল আহসানকে জানালে, কাশেমের বড় ভাই প্রভাষক হাশেম তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এছাড়া, আনোয়ার নামের আরেক অভিযুক্ত ব্যক্তি বেড়া বাজার চৌরাস্তায় সেলিম নামের এক যুবককে লাঠিপেটা করেন। তার সঙ্গে ছিলো বড় ভাই মাসুদ এবং ছাত্রলীগ নেতা ছোট ভাই আনন্দ। এলাকাবাসীর দাবি, হামলার সময় বাজারে উপস্থিত থাকলেও কেউ সেলিমকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি—ভয়ের কারণেই।
অভিযোগ রয়েছে, তারা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে। সম্প্রতি এক দোকানের কর্মচারীর সঙ্গে সামান্য বাকবিতণ্ডায় ক্ষিপ্ত হয়ে পুরো দোকান বন্ধ করে দেন তারা। এছাড়া টাকার বিনিময়ে জমি দখল ও সালিশ নিয়ন্ত্রণের ঘটনাও উল্লেখ করেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্তদের প্রকৃত রাজনৈতিক পরিচয় খুবই সুবিধাভোগী ধরনের। কখনো আওয়ামী লীগ নেতার জামাই পরিচয়, কখনো বিএনপি নেতা সেজে ফায়দা লুটে চলেছে এ গং। এমনকি মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে আনোয়ার ও টিটুর বিরুদ্ধে।
বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে তারা লিখিতভাবে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। অভিযোগকারীদের ভাষ্য, "এভাবে চলতে থাকলে বেড়া গ্রামে মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার।"
এলাকাবাসী বলছে, ইউনিয়ন বিএনপির প্রভাবশালী এক নেতার প্রশয়ে তারা লাগামহীন হয়ে উঠেছে৷ আনোয়ার এর ছোট ভাই আনন্দ বর্তমানে ৩ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং শহীদ প্রামাণিক ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি। কাশেম এর বাবা বর্তমান ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী কৃষকলীগের সহ-সভাপতি এবং তার বড় ভাই হাশেম প্রভাষক সরকারের পতনের ১ মাস আগে ২০২৪ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের বাসায় গিয়ে দেখা করে আসেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে যা এখন ফেইসবুকে ভাইরাল।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে।













