দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যাচ্ছেন না পুতিন
আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট- আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিতব্য ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে সেখানে যাচ্ছেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আগামী ২২ থেকে ২৪ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার বাণিজ্যিক রাজধানী জোহানেসবার্গে হবে এই সম্মেলন।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার মুখপাত্র ভিনসেন্ট মেগওয়েনিয়া এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ উভয়ই নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য।
বুধবার এক বিবৃতিতে মেগওয়ানিয়া বলেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগামী ব্রিকস সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন না। সম্মেলনে পুতিনের পরিবর্তে রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করবেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। দক্ষিণ আফ্রিকা ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’
পুতিন ব্যতীত ব্রিকসের অন্যান্য দেশের সরকারপ্রধানরা জোহানেসবার্গের সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন মেগওয়ানিয়া।
একই দিন মস্কোতে নিয়মিত ব্রিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভও। তবে তিনি বলেছেন, শারীরিকভাবে উপস্থিত না থাকলেও ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাতে যোগ দেবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফিকা— ৫ দেশের অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের জন্ম ২০০১ সালে। এটি মূলত সদস্যরাষ্ট্রগুলোর পারস্পরিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতেই এই জোটটি গঠন করা হয়।
প্রথম দিকে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত এবং চীন এই জোটের সদস্য ছিল। পরে ২০১০ সালে এতে যোগ দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। সদস্যরাষ্ট্রগুলোর ইংরেজি নামের অদ্যাক্ষর দিয়ে নামকরণ করা হয়েছে এই জোটের।
চলতি বছরের ১৭ মার্চ পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি। আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইউক্রেনের শিশু ও নাগরিকদের তাদের ভূখণ্ড থেকে রাশিয়ান ফেডারেশনে বেআইনিভাবে স্থানান্তরের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে স্বীকৃতি দেয়নি রাশিয়া। এই আদালতের সদস্যরাষ্ট্রও নয় দেশটি। ফলে আইসিসির পরোয়ানা রাশিয়ায় কার্যকর হওয়ার কোনো উপায় নেই।
কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিসির সদস্য। অন্যদিকে রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির সম্পর্কও বেশ ঘনিষ্ট। এ কারণে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকলেও পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ — দক্ষিণ আফ্রিকা রুশঘেঁষা নীতিতে চলে। পুতিন যদি সেই সম্মেলনে যোগ দিতে যেতেন, সেক্ষেত্রে দেশটির ওপর পশ্চিমাদের চাপ আরও বৃদ্ধি পেত।
বুধবারের ব্রিফিংয়ে পেসকভ বলেন, ‘পশ্চিমারা রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানকে গ্রেপ্তার করলে তার ফলাফল কীব হতে পারে— তা বিশ্ববাসী জানে। কিন্তু আমরা চাই না (পুতিন গেলে) এ ব্যাপারটিকে ইস্যু করে পশ্চিমারা কোনো দেশের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করুক। তাই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
কেএইচ