‘কৃষি সমৃদ্ধি’ শ্লোগানকে সামনে রেখে সাত দিনব্যাপী কৃষি মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (১৫ জুলাই) থেকে এই মেলা ২১ জুলাই পর্যন্ত চলবে। কিশোরগেঞ্জের হোসেপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে বৃহত্তম ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৩টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিন্দ্য মন্ডল এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের সুযোগ্য কন্যা (কিশোরগঞ্জ-১) আসনের মাননীয় সাংসদ সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি। প্রধান অতিথি হিসেবে হোসেনপুর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছ বিতরণ করেন।
এমপি সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি বলেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাড়ির আঙিনা, ছাদ, সড়ক, অফিস-আদালতের যেখানে পরিত্যক্ত জায়গা আছে সেখানেই গাছ লাগাতে হবে। বনজ, ফলজ ও ভেষজ এই তিন ধরনের গাছ লাগান। তাহলে আমরা দেশ ও পরিবেশ রক্ষা করতে পারব। পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই।
এই কৃষি মেলার উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একে এম শাহজাহান কবির। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহেল, হোসেনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল ইসলাম নূরু মিয়া, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রৌওশনারা।
মেলায় ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্টলে সারি সারি সাজানো বনজ, ফলজ, সবজি ও ঔষধি দেশি-বিদেশি নানান প্রজাতির গাছ। এরমধ্যে এক স্টলে দেখা গেছে ৩২ কেজি ওজনের কাঁঠাল, ২৫ কেজি ওজনের মিষ্টি কুমড়া সহ প্রায় ৬০ রকমের ফল। হোসেনপুর উপজেলার সহকারী কৃষিকর্মকর্তা জানান, এই সব ফল হোসেনপুরের কৃষকদের কাছ থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো তারা নিজেরা চাষ করেছেন।
এছাড়াও বিভিন্ন স্টলে পাওয়া যাচ্ছে নানা প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ। এদের মধ্যে আছে- জবাফুল, ম্যান্ডেভিলা, ফুল, হাসনাহেনা, পলাশ, কনকচাঁপা, বাসন্তি, মালতী, নয়নতারা, আম, আতা, কুল, বড়ই, ডালিম, করমচা, বেল, জাম্বুরা, কাঁঠাল, লাল কাঁঠাল, চাম কাঁঠাল, ডুমুর, কাজু বাদাম, ডুরিয়ান, অলিভ, কাউ, পিচ, কিউই ফল, অ্যাভোকেডো, আলমন্ডা, ড্রাসিনা, চেরি ফল, পার্সিমন ফল, ড্রাগন, ট্যাং ফল, অ্যাপ্রিকট ফল, আদা জামির, স্ট্রবেরি পেয়ারা, বিলাতি গাব, লটকনসহ নাম জানা-অজানা হাজারো ফুল ও ফলের দেশি-বিদেশি গাছ।
মেলায় ঘুরতে আসা কলেজ শিক্ষার্থী সায়িম আহমেদ রিয়ান বলেন, আমার খুব পছন্দের ফুল কাঠগোলাপ। কয়েকটি স্টল ঘুরে একটি দোকানে পেয়েছি। এখন আমার অনেক ভালো লাগছে।
কৃষি মেলা বাণিজ্যিক ও গবেষণা উদ্যোক্তাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে নতুন প্রযুক্তি, কৃষি উদ্যোক্তাদের পরামর্শ প্রদান ও অনেকেই বিপণনের সুযোগ পান। অতিরিক্ত কৃষি প্রকৌশল, উদ্ভিদ রোগনিরোধ, ফসল সংরক্ষণ, জৈব কৃষি ও গবেষণা, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, কৃষি বিতরণ ও পণ্য পরিবহনের মধ্যে নতুন উন্নয়নের প্রদর্শনীগুলি আয়োজিত হয়।
এই কৃষি মেলা কৃষকদের জন্য অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অবসর দিনের মতো হয়ে ওঠে। এখানে তারা নতুন উন্নয়ন ও প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারেন। সাধারণ ব্যবসার জন্য উপযুক্ত পণ্য ও সেবা কেনার সুযোগ পান।
প্রসঙ্গত, প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই মেলা।
কেএইচ